স্টাফ রিপোর্ট।
মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলা সদরের হাজীগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ি সমিতির যুগ্ম আহবায়ক পোল্ট্রি ব্যবসায়ি শামীম আহমদের বিরুদ্ধে ফ্রান্স প্রবাসী সাব্বির আহমদের কাছে মরা মোরগ বিক্রির অভিযোগ ওঠায় তাকে ব্যবসায়ি সমিতি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ওই ফ্রান্স প্রবাসী বাড়ি গিয়ে ব্যাগ খুলে মরা ও পঁচা মোরগ দেখেই তা ফেরত নিয়ে গিয়ে প্রতিবাদ করলে শামীম আহমদ তাকে চরম অপদস্ত, হেনস্থা ও হুমকি-ধমকি দেন। হুমকি ধমকির কারণে এক পর্যায়ে ভোক্তভোগি এই প্রবাসী অভিমান করে লাইভে গিয়ে বলেন, ‘প্রতারণা, অপকর্ম ও অবিচারের প্রতিবাদ করে তিনি ভুল করেছেন, তাকে যেন ক্ষমা করে দেন। একজন প্রবাসী কতটা কষ্ট আর অসহায়বোধ করলে এই রকম লাইভে এসে হাত জোড় করে ক্ষমা প্রার্থনা করে। তার অপরাধ কি ছিল’
প্রতারণাকারী ব্যবসায়ির বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পৌরপ্রশাসক, পুলিশ প্রশাসন ও সেনাক্যাম্প ইনচার্জের প্রতি ভোক্তভোগি মহল জোর দাবি জানিয়েছেন।
বড়লেখা হাজীগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ি সমিতির আহবায়ক হাজী আব্দুল হান্নান জানান, এ ঘটনায় ব্যবসায়ি সমিতির আহবায়ক কমিটি ২ এপ্রিল রাতে জরুরি সভা ডেকে অভিযুক্ত যুগ্ম আহবায়ক শামীম আহমদকে ব্যবসায়ি সমিতি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটির প্রধান হলেন- ব্যবসায়ি সমিতির আহবায়ক কমিটির সদস্য আব্দুর রহমান মানিক। সদস্যরা হলেন- হারুনুর রশীদ বাদশা ও আব্দুল হক।
অভিযুক্ত পোল্ট্রি ব্যবসায়ি শামীম আহমদ জানান, তিনি কোনো মৃত মোরগ বিক্রি করেননি। বিক্রির প্রায় তিনঘন্টা পর ওই প্রবাসী মোরগগুলি ফেরত নিয়ে আসেন। লাইভ করায় তিনি উনার সাথে কিছুটা খারাপ ব্যবহার করেছেন। তবে, এইজন্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
ভোক্তভোগি প্রবাসী সাব্বির আহমদ জানান, বাড়িতে নিয়ে ব্যাগ খুলে দুইটি মোরগ দুই ধরণের দেখে বুঝতে পারেন এক একটি মৃত ও পঁচা ছিল। তিনঘন্টা পরে নয়, কয়েক মিনিটের মধ্যেই তিনি ফেরত নিয়ে আসলে শামীম আহমদ কোনো সমাধান না দিয়ে তাকে চরম অপদস্ত ও হেনস্তা করেন, হুমকি ধমকি দেন। যা লাইভে দেশ-বিদেশের লোকজন দেখেছেন। লাইভ না করলেতো কেউ বিশ্বাসই করতেন না তিনি কী আচরণ করেছেন। পরবর্তীতে নানা হুমকি-ধমকির কারণে পুনরায় লাইভ করেছি, অপরাধের প্রতিবাদ করা তার ভুল হয়েছে, সবাই যেন তাকে ক্ষমা করে দেন।
ইউএনও (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারি কমিশনার ভূমি মোহাম্মদ আসলাম সারোয়ার জানান, ওই পোল্ট্রি ব্যবসায়ির বিরুদ্ধে অসদাচরণের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। ওজনে কম দেওয়াসহ বিভিন্ন অনিয়মের কারণে ইতপূর্বে একাধিকবার তার বিরুদ্ধে মোবাইলকোর্ট জরিমানা ও মুচলেকা আদায় করেছে। তারপর তিনি সংশোধিত না হওয়ার অভিযোগ পাচ্ছেন। এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতারণা ও অসদাচরণের ব্যাপারে প্রবাসী চাইলে নিয়মিত আদালতে মামলাও করতে পারেন।